Header Ads

হযরত আলী (রাঃ)

হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ)

হযরত আলী (রাঃ) হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) মুহাম্মাদ (সঃ) এর চাচাত ভাই ও জামাতা এবং চতুর্থ খলীফা । তাঁহার পিতা আবু তালিব ছিলেন আব্দুল মুত্তালিব ইবন হাশিমের পুত্র । আলী (রাঃ) এর ডাক নাম আবু তুরাব, হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর নিকট হইতে প্রাপ্ত । তিনি হযরত (সঃ) এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) কে বিবাহ করেন । তাঁহার মাতার নাম ফাতেমা বিনতে আসাদ ইবন হাশিম । ইসলাম গ্রহণের সময় তাঁহার বয়স কত ছিল তাহা সঠিকরূপে নির্ধারন করা যায় না । হযরত খাদীজা (রাঃ) এর পরে তিনি প্রথম মুসলিম; আবুযার, আল মিকদাদ, আবু সাইদ আল খুদরী (রাঃ) প্রমুখের মতে বুরায়দা ইবনিল হুসায়ব (রাঃ) অথবা তিনি দ্বিতীয় মুসলিম । হযরত (সঃ) যে দশজনকে জান্নাতে প্রবেশ লাভ করিবেন বলিয়া স্পষ্টভাবে সুসংবাদ প্রদান করেন, তিনি তাহাদের অন্যতম । উমার (রাঃ) কর্তৃক তাঁহার মৃত্যুশয্যায় মনোনীত ছয়জন নির্বাচকেরও তিনি ছিলেন অন্যতম ।

হযরত আলী (রাঃ) এর বয়ছ ছিল তখন প্রায় বাইশ বছর । আল্লাহ্‌ তা’আলার নির্দেশে হযরত মুহাম্মদ (সঃ) ইয়াছরিবে হিজরত করার শেষ রাতে শত্রুদের চোখের সামনে দিয়া নিরাপদে গৃহ ত্যাগ করিলেন । যাবার সময় হযরত আলী (রাঃ) কে আমানতের গচ্ছিত সম্পদ প্রদানের দায়িত্ব দিয়া গেলেন । প্রত্যুষে শত্রুপক্ষ দেখিল, রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর বিছানায় শেরে খোদা হযরত আলী (রাঃ) নিশ্চিন্ত মনে শুইয়া আছে ।

হিজরাতের দ্বিতীয় বর্ষে হযরত (সঃ) এর প্রিয় কন্যা ফাতেমা (রাঃ) এর সহিত আলী (রাঃ) এর বিবাহ সম্পন্ন হয় । বিবাহের সময় হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বয়স ছিল ১৪ বছর এবং হযরত আলী (রাঃ) এর বয়স ছিল ২২ বছর । (তাবাকাতে ইবনে সা’দ, এসাবা, খোলাফায়ে রাশেদিন) । তিনি বদর, উহুদ ও খন্দক(পরিখা) এর যুদ্ধে যোগদান এবং তাবূক ছাড়া অন্য সমস্ত অভিযানে হযরত (সঃ) এর সঙ্গে গমন করেন । তাবূক অভিযানের সময় হযরত (সঃ) এর অনুপস্থিতিতে তাঁহার পরিবার-বর্গের তত্ত্বাবধান এবং মদিনার শাসনভার তাঁহার উপর ন্যস্ত ছিল । উহুদের যুদ্ধে তিনি ষোলটি আঘাতপ্রাপ্ত হন; তাঁহার প্রচণ্ড আক্রমণে খায়বারের দুর্জয় কা’মূস দূর্গের পতন ঘটে ।

হযরত (সঃ) এর উপর নবম সূরা (আল বারা’আঃ বা আত-তাওবা) অবতীর্ন হওয়ার অল্প পরে উহার প্রথম তেরটি আয়াত হাজ্জের সময় মিনা প্রান্তরে সর্বসমক্ষে ঘোষণা করার জন্য হযরত (সঃ) তাহাকে প্রেরণ করেন । দশম হিজরি, মুতাবিক ৬৩১-৩২ সনে আলী (রাঃ) ইয়ামানে এ প্রচার সফরে গমন করেন । ইহারই ফলে হামাদানীরা ইসলাম গ্রহণ করে । এ বছরই রাসুল (সঃ) হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে মক্কাশরীফ গমন করেন; হজ্জ হতে ফেরার পথে তিনি হযরত আলী (রাঃ) এর হাত ধরিয়া ফরমাইলেন “আমি যাহার মওলা হই, ইনিও অর্থাৎ হযরত আলী (রাঃ)ও তাঁহার মওলা ।”

হিজরাতের বছরকে ইসলামী সনের প্রারম্ভ হিসাবে গ্রহণের জন্য আলী (রাঃ) ই উমার (রাঃ) কে পরামর্শ দেন । হযরত উছমান (রাঃ) এর ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রদেশসমূহ হইতে অভিযোগ আসিলে তাঁহার নিকট অভিযোগগুলি উত্থাপনের ভার আলী (রাঃ) এর উপর অর্পিত হয় । উছমান (রাঃ) এর সময়ে অরাজকতা দেখা দিলে আলী (রাঃ) খালীফা ও বিক্ষুব্ধদের মধ্যস্থের কাজ করেন । উছমান (রাঃ) এর গৃহ অবরোধের সময় আলী (রাঃ) তাঁহার আনুকূল্য প্রদর্শন করেন এবং তাঁহার নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন । উছমান (রাঃ) এর শহীদ হওয়ার পর তিনি খিলাফাতের দায়িত্ব গ্রহণের প্রস্তাব প্রথমে বিনীতভাবে অস্বীকার করেন, কিন্তু পাঁচ দিন পরে সাহাবীদের অনুরোধে সাহাবীদের অনুরোধে তাহা গ্রহণ করেন । ৩৫ হিজরির জুলহিজ্জা শুক্রবার (জুন ২৪, ৬৫৬) মদিনার মসজিদে সমবেত মুসলিমগণ খালীফা হিসাবে তাঁহার হাতে বায়া’ত করেন ।

খিলাফাত গ্রহণের পরেই সর্বপ্রথম তিনি হযরত উসমান গনী (রাঃ) এর হন্তাদের খোঁজ করেন । কিন্তু প্রকৃত হন্তার কোন সন্ধান পাইলেন না । হযরত আলী (রাঃ) উপলব্ধি করিতে পারিয়াছিলেন যে বনু উমাইয়াদের বিশৃঙ্খলার দরুনই ইসলামী খিলাফাত এমন গুরুতর পরিস্থিতির সম্মুখীন হইয়াছে । তাই তিনি উচ্চপদস্থ সকলকে একে একে রদবদল করিলেন । এই রদবদলে হযরত ওসমান ইবনে হানীফ (রাঃ) বসরার এবং হযরত সাহল (রাঃ) সিরিয়ার গভর্নর নিযুক্ত হন ।

হযরত সাহল (রাঃ) সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হইলে তবুক নামক স্থানে আমীর মুআবিয়া (রাঃ) এর লোকদের দ্বারা বাঁধা প্রাপ্ত হন । আমীর মুআবিয়া (রাঃ) হযরত উসমান গনী (রাঃ) এর হত্যার প্রতিশোধ লইবার জন্য শর্ত জুড়িয়া দেন । এদিকে হযরত আলী (রাঃ) উসমান (রাঃ) এর হত্যাকারীদের সন্ধান না পাওয়ায় হযরত তালহা (রাঃ) এবং হযরত যুবাইর (রাঃ) অসন্তুষ্ট হইয়া মক্কায় চলিয়া গেলেন । এসময় হযরত আয়েশা (রাঃ) হজ্জ পালনে নিমিত্ত মক্কায় অবস্থান করিতেছিলেন । সিরিয়া ও কুফা ব্যতীত অন্যান্য স্থানে আলী (রাঃ) এর নিযুক্ত গভর্নরগণ সমর্থন পান । এই পরিস্থিতিতে হযরত আলী (রাঃ) বুঝিতে পারিলেন যে, যুদ্ধ ব্যতীত এই গুরুতর পরিস্থিতির মোকাবেলা করা সম্ভবপর হইবে না । হযরত আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে এই ফ্যাসাদ ও বিদ্রোহের পরিচালক মারওয়ান ইবনে হাকাম তখন মক্কায় অবস্থান করিতেছিলেন । মুআবিয়া (রাঃ) এর সমর্থকদের একটা বিরাট দলও তাঁহার সাথে ছিল । তাহারা মিলিয়া হযরত আয়েশা (রাঃ) কে হযরত আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে উত্তেজিত করিতেছিল এবং তাহাকে বসরায় গিয়া হযরত তালহা (রাঃ) এর সমর্থকদের সঙ্গে লইয়া মদিনায় গমন করিতে উদ্বুদ্ধ করিলেন । হযরত আলী (রাঃ) বসরার এইরূপ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হন । মদীনা হইতে বসরাভিমুখে যখন রওনা হন তখন সুযোগসন্ধানী আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা এবং তাঁহার সঙ্গীরা হযরত আলী (রাঃ) এর সৈন্যদলে যোগদান করেন । প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত কাকা (রাঃ) কে তিনি আয়েশা (রাঃ) প্রমুখের খেদমতে প্রেরণ করিয়া মতানৈক্য দূর করার প্রয়াস চালান । হযরত কাকা (রাঃ) যুক্তিসঙ্গত বিবৃতির মাধ্যমে তাহাদের মধ্যে মতভেদ দূর করিতে সমর্থ হন । কিন্তু রাত্রিকালে উভয় দলে উপস্থিত মুনাফিকেরা কুচক্র করিয়া একে অপরের উপর ঝাপাইয়া পড়িয়া যুদ্ধ সৃষ্টি করিল । হযরত আয়েশা (রাঃ) এবং হযরত আলী (রাঃ) উভয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করিয়া যুদ্ধ থামাইতে চেষ্টা চালাইতেছিলেন ।

যুদ্ধ চলাকালে একসময় হযরত আলী (রাঃ) অশ্বারোহণে হযরত যুবাইর (রাঃ) এর কাছে আসিয়া ফরমাইলেন, ‘হে আবু আব্দুল্লাহ তুমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর সম্মুখে এই কথা বলিয়াছিলে যে, আমি হযরত আলীকে ভালবাসি’। এতদুত্তরে রসুলুল্লাহ (সঃ) ফরমাইয়াছিলেনঃ “তুমি একদিন অনর্থক আলীর সহিত যুদ্ধ করিবে । “ কথাটা তোমার স্মরণ আছে কি?’

হযরত যুবাইর (রাঃ) কথাটা শ্রবণ করামাত্রই চমকিয়া উঠিলেন এবং রণক্ষেত্র ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলেন এবং সেবাহ্‌ নামক ময়দানে গিয়া নামাজ পড়িতে লাগিলেন । কিন্তু আমর ইবনে জরমুয নামক জনৈক সাবাঈ তাহাকে নামাজরত অবস্থায় তরবারি দ্বারা শহীদ করিল । হযরত আলী (রাঃ) যুবাইর (রাঃ) এর মস্তক দেখামাত্রই ক্রন্দন করিলেন এবং বলিলেন ‘ইহা সেই যুবাইরের মস্তক, যাহার তরবারি দীর্ঘকাল ধরিয়া রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর হেফাজত করিয়াছে । হে যুবাইরের হত্যাকারী আমি তোমকে জাহান্নামের সুসংবাদ জানাইতেছি ।” হত্যার পুরস্কার না পাইয়া ক্ষোভে অস্থির ইবনে জরমুয নিজের বুকে আপন তলোয়ার ঢুকাইয়া আত্নহত্যা করিল । এইভাবে হযরত আলী (রাঃ) তাহাকে যে সুসংবাদ জানাইয়াছিলেন তা সত্যে পরিণত হইল ।

অতঃপর আলী (রাঃ) উম্মুল মোমেনীন হজর আয়েশা (রঃ) এর খেদমতে হাযির হইলেন এবং কুশলাদি জিজ্ঞাসা করিলেন । উভয়পক্ষের ভুল বুঝাবুঝির উপর অনুতাপ প্রকাশ করা হইল ।

এই যুদ্ধের নাম জঙ্গে জামাল । জামাল অর্থ উট । আয়েশা (রাঃ) এর উট ব্যবহার করিয়া মোনাফিকেরা যুদ্ধ চালাইয়া যাইতেছিল । যখন এই উট বসিয়া পড়িল যুদ্ধও ক্ষান্ত হইল । মুনাফিকেরা পলায়ন করিল ।

জঙ্গে জামালে আলী (রাঃ) জয়ী হবার পর আমীর মুআবিয়া (রাঃ) বুঝিতে পারিলেন যে আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভবপর হইবে না । তাই শোরাহবিল ইবনে সামাত (রাঃ) এর সহযগীতায় তিনি সিরিয়াব্যাপী ব্যাপক সমর্থন আদায় করিবারা প্রয়াস করিলেন । ওসমান (রাঃ) এর রক্তমাখা জামা এবং তৎপত্নী নায়েলা (রাঃ) এর কাটা অঙ্গুলি [ যাহা ওসমান (রাঃ) কে রক্ষা করার চেষ্টায় কাটা গিয়াছিল ] এই দুইটি জিনিস জনসাধারণকে উত্তেজিত করতে ব্যবহার করা হইয়াছিল ।

এদিকে আমীর মুআবিয়া (রাঃ) এর প্রভাব হ্রাস এবং রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর স্মৃতিবিজড়িত শহর মদিনাকে আক্রমণ থেকে হেফাজতের উদ্দেশ্যে আলী (রাঃ) মদীনা থেকে রাজধানী কুফায় স্থানান্তর করিলেন ।

হযরত আলী (রাঃ) মুআবিয়া (রাঃ) এর সৈন্যদলকে ভয় করিতেন না; কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে হানাহানি তিনি পছন্দ করিলেন না । তাই মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট সন্ধিপত্র পাঠাইয়া দিলেন এই মর্মে যে তিনি উসমান (রাঃ) এর হত্যাকারীদের বিচার করিবেন তবে এই জন্য আলী (রাঃ) এর বাইয়াত গ্রহণ করা জরুরী । কারন হযরত আলী (রাঃ) মুহাজির ও আনসারগণের দ্বারাই খলিফা নির্বাচিত হইয়াছেন । জবাবে মুআবিয়া (রাঃ) লিখিলেন, ‘আমরা আপনার হাতে বাইয়াত করিতে অস্বীকার করিতেছি না এবং আপনার যোগ্যতাও অস্বীকার করি না, তবে একটা শর্ত আছে এবং উহা এই যে, হযরত উসমান (রাঃ) এর হত্যাকারীদেরকে আমাদের হাতে অর্পন করিতে হইবে ।’

হজরত আলী (রাঃ) পুনরায় চিঠিতে মতৈক্যে পোছাতে আমীর মুআবিয়া (রাঃ) এবং তাঁর উপদেষ্টা আমর ইবনুল আ’সকে নির্দেশ দিলেন; অন্যথায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হইবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হইবে ।

এই চিঠির পরো কোন ধরনের মতৈক্যে পৌঁছা সম্ভবপর হয় নি । বাধ্য হইয়া হিজরি ৩৬ সালের শেষভাগে হযরত আলী (রাঃ) আশি হাজার সৈন্য লইয়া আমীর মুআবিয়ার মোকাবেলার জন্য রওনা হইলেন এবং ফোরাত নদীর তীরে সিফফফীন নামক স্থানে গিয়া অবস্থান করিলেন ।

এদিকে আমীর মুআবিয়ার সৈন্যগণ আগেই ফোরাত অধিকার করিয়া রাখিয়াছিলেন । তাহারা আলী (রাঃ) এর সৈন্যদের পানি ব্যাবহার করিতে দিত না । ফলে পানি লইয়া যুদ্ধ লাগিয়া গেল । এই যুদ্ধ সিফফিনের যুদ্ধ নামে পরিচিত । মুআবিয়া (রাঃ) এর সৈন্যগণ পলায়ন করিলেন । কিন্তু ফোরাতের পানি অধিকারে আসার পর হাসেমীগন এই পানি পানে কাউকে বাঁধা প্রদান করেননি । কয়েক মাসব্যাপী বারংবার এই যুদ্ধ চলে । উভয়পক্ষের অনেক সৈন্য নিহত হইল । রণক্ষেত্র লাশে পরিপূর্ন হইয়া গেল । দীর্ঘ যুদ্ধের পর মুআবিয়া (রাঃ) এর সৈন্যদল ক্রমশঃ দূর্বল হইয়া পড়িল এবং পরাজয়ের আশঙ্কায় সন্ধিপ্রস্তাব হযরত আলী (রাঃ) কে পাঠাইলেন । হিজরি ৩৭ সনের রবিউল আউয়াল মাসে উভয়পক্ষ সন্ধিপত্রে সাক্ষর করিল এবং সিদ্ধান্ত হইল যে, বিচারকদের সিদ্ধান্ত ঘোষণার অনুষ্ঠান শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী এলাকা দুমাতুল জন্দল নামক স্থান অনুষ্ঠিত হইবে । দুইজন বিচারক হওয়ায় যা হইবার তাহাই হইল; রায়ের পরিণাম দুঃখজনক হইল । সন্ধির পরপর একদল বিপ্লবী সন্ধি ভাঙ্গিয়া পুনরায় যুদ্ধ আরম্ভ করিবার চেষ্টা করিল । কুটচেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায় আলী (রাঃ) এর দলত্যাগ করিল । ইতিহাসে তাহারা খারিজি বলে পরিচিত । ইহাদের অনেক আকিদা ইসলাম সঙ্গত ছিল না । তাহারা একত্রিত হইয়া নিরীহ মুসলমান নর-নারীকে নির্দয়ভাবে হত্যা করিয়া চলিল । অবশেষে তাহাদের দমনার্থে আলী (রাঃ) অগ্রসর হইলেন । মুসলমানদের হাতে তারা পরাজিত হইল । কিন্তু আলী (রাঃ) এর বাহিনী ক্রমশঃ দূর্বল হইয়া গেল ।

অপরদিকে আমীর মুআবিয়া (রাঃ) শক্তিশালী হইয়া হেজাজ, ইরাক ও মিশরে আধিপত্য বিস্তার করিতে লাগিলেন । তাঁহার হাতে মক্কা ও মদিনার পতন হইল । অতঃপর ইয়ামনে আক্রমণ করিলেন এবং বহু সাধারণ লোক নিহত হইল । এইরূপ অরাজকতায় খারিজিরা সুযোগ লইল । আব্দুর রহমান ইবনে মুজলেম ১৮ ই রমজান ফজরের নামাজ ইমামতীকালীন আলী (রাঃ) কে বিষমাখা তরবারি দ্বারা মাথায় আঘাত করিল । হযরত আলী (রাঃ) নামাজের মসল্লাতেই শুইয়া পড়িলেন । তিনদিন পর ২১ শে রমজানর রাত্রে এই এলেমের সূর্য অস্ত গেল ।

রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর কোলে যিনি লালিত-পালিত হইয়াছিলেন, রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর মুখে যিনি কোরআন পাক শ্রবণ করিয়াছেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছেই যিনি কুরআন শিক্ষা লাভ করিয়াছেন এবং বুঝিয়াছেন, তাঁহার এলম সম্পর্কে আর কাহার এলেমের তুলনা করা যাইতে পারে? রাসুলুল্লাহ (সঃ) ফরমাইয়াছেনঃ “আমি এলেমের শহর এবং আলী উহার দরজা ।“ এই কাড়নের সাহাবীগণের মধ্যে হযরত আলী (রাঃ) অন্যান্য সাধারণ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন ।

No comments

Leave a comment to inspire us.

Powered by Blogger.