কার্বন বৃদ্ধির কারণ হয়ে থাকতে পারে ধূমকেতুর সংঘর্ষ
ধূমকেতুই কি ছিল কার্বন বৃদ্ধির বাহক? |
বর্তমানে বৈশ্বিক যে পরিবর্তন হচ্ছে তার কারণ নিয়ে আমরা সবাই চিন্তিত। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় নিত্যনতুন একটি সন্ধান উঠে আসে এবং তাতে করে দিন দিন সকলের কপালের ভাঁজটা যেন বেড়েই চলেছে। পৃথিবীর বড় বড় শক্তিধর যে দেশগুলো রয়েছে তার কর্তাব্যক্তিরা চাইছেন এর একটি সুরাহা হোক। এটি আমরা সকলেই চাই। কারণ বাসযোগ্য এই পৃথিবীর মানুষ হিসেবে আমি আপনি চাইব প্রাণভরে কয়েকটা দিন যেন নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচতে পারি।
নিউ জার্সির উপকূলবর্তী অঞ্চলের কাছাকাছি পাওয়া কিছু সূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে ৫৫মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির সময়ে একটি সংঘর্ষ হয়েছিল যার ফলে বর্তমানের এই কার্বন বৃদ্ধি ঘটে থাকতে পারে।
প্যালিওসিন-ইওসিন থার্মাল ম্যাক্সিমাম বা PETM নামক সময়টি ছিল পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির সময়। এই সময়ে পৃথিবীর বায়ূমন্ডলে কার্বন বৃদ্ধির হার হঠাৎ করেই বেড়ে যায় এবং এটি প্রায় দুই লক্ষ বছর স্থায়ী থাকে। পৃথিবীর কার্বন বৃদ্ধির হার ১৬ ডিগ্রী পর্যন্ত বেড়ে যায়। এর ফলে যেটি দেখা যায় তা হচ্ছে, সামুদ্রিক অঞ্চলের প্রাণীরা বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে এবং ভূমির যে প্রাণীরা রয়েছে, তারা নিজেদের কোনভাবে টিকিয়ে রাখতে সমর্থ হয়। তারপর ধীরে ধীরে পৃথিবীর উষ্ণতা কমে আসতে শুরু করলে এই প্রাণীগুলো মেরু অঞ্চলের দিকে যেতে থাকে। আস্তে আস্তে শুরু হয় কিছু কিছু প্রাণীর বিবর্তন।
বিজ্ঞানীদের মাঝে এখনো কিছু বিতর্ক রয়েছে কি করে পৃথিবীর কার্বন বৃদ্ধি হল তা নিয়ে। কেউ কেউ বলে থাকেন আগ্নেয়গিরির লাভার উত্তপ্ততার ফসল হচ্ছে আজকের এই কার্বন বৃদ্ধি। আবার কেউ কেউ বলে থাকেন যে সমুদ্রের নিচের পৃষ্ঠের হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণে মিথেন গ্যাসের নিঃসরণ হয়ে থাকতে পারে এর প্রধান কারণ।
কিন্তু সাইন্স জার্নালে প্রকাশিত হওয়া একটি নতুন গবেষণা পত্রে দেখা যায় যে, পৃথিবীর কোন উপাদান নয় বরং এর জন্য পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা ধূমকেতু বা প্রস্তরখন্ডের সংঘর্ষই প্রধান কারণ।
তবে কি ধূমকেতুই কার্বন বৃদ্ধির কারণ? |
নিউ জার্সির গবেষকেরা কিছু ছোট কাঁচের কণার মত শুকিয়ে যাওয়া খন্ড পেয়েছেন যেগুলোকে “মাইক্রোটেকটাইটস” বলা হয়ে থাকে। এগুলো বাতাসে ভেসে থাকা পদার্থগুলোর সাথে মিশে এরুপ আকৃতি ধারণ করে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যে এই পদার্থগুলো এসেছে লক্ষ লক্ষ বছর আগে সংঘর্ষিত ধূমকেতুর অংশ থেকে।
এই ধূমকেতুর সংঘর্ষ যদি বর্তমানের পৃথিবীর কার্বন বৃদ্ধির জন্য দায়ী হয়ে থাকে তবে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন তারা পরিবেশ সম্পর্কিত আরো নানা ধরনের তথ্য পেতে সমর্থ হবেন। কারণ, এতোদিন তাদের কাছে যে তথ্য ছিল আস্তে আস্তে সে তথ্যগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে এবং নতুন নতুন প্রমাণ তারা পাচ্ছেন।
সূত্রঃ সায়েন্স জার্নাল
No comments
Leave a comment to inspire us.