Header Ads

সারাহ: নাম গোপন করে বার্তা আদান-প্রদান!

বর্তমানে বেশ আলোচিত এক বার্তা আদান-প্রদানের সার্ভিস সারাহ ডট কম। মূলত নাম গোপন করে বার্তা আদান-প্রদানের একটি সার্ভিস হচ্ছে সারাহ। যখনই কেউ এখানে নিবন্ধিত হচ্ছেন তখন উক্ত ব্যবহারকারী একটি লিংক পাচ্ছেন। সে লিংকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোন মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করছেন। যেখানে যে কেউ পরিচয় গোপন রেখে বার্তা পাঠাতে পারছেন। নানা ধরনের বিতর্ক তৈরি হলেও ইতিমধ্যেই তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ সার্ভিসটি। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আর যুক্তরাজ্যের বড় একটি অংশ টিনেজারের স্মার্টফোনে বেশ জনপ্রিয় সারাহ!
সারাহ’র শুরু
সারাহ ব্যবহার করে কেউ বার্তা পাঠালে যিনি পাচ্ছেন তিনি কোন ভাবেই জানতে পারেন না কে তাকে বার্তাটি পাঠিয়েছে। আর এ কারণেই হঠাৎ করেই বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছে সারাহ! সারাহ’র যাত্রা শুরু হয় সৌদি আরবের ডেভলপার জাইন আল-আবিদিন তৌফিক-এর হাত ধরে। তিনি মূলত একটি ওয়েবসাইট হিসেবে সারাহ শুরু করেছিলেন যার লক্ষ্য ছিল, কর্মক্ষেত্রে নাম গোপন করে কর্মীরা যাতে ফিডব্যাক জানাতে পারেন। তার মতে, সারাহ এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তৈরি করা হয়েছে যেখানে প্রতিষ্ঠানের যে সকল কর্মী চাকুরি হারানোর ভয়ে অনেক বিষয় বলতে পারেন না তারা যাতে নাম ও পরিচয় গোপন করে সে কথাগুলো বলতে পারেন!
সারাহ শুরুর সময় তৌফিক এ আইডিয়াকে ব্যক্তিগত পর্যায়েই ব্যবহারের কথা ভেবেছিলেন। বিশেষ করে বন্ধু কিংবা কাছের মানুষদের কাছে বিষয়টি নিয়ে শেয়ারও করেছিলেন। এভাবেই সারাহ মধ্য প্রাচ্য ও আফ্রিকায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ধীরে ধীরে অন্য দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে সারাহ।  অবশেষে ১৩ জুন এ সার্ভিসটির জনপ্রিয়তা দেখে এর ডেভলপার তৌফিক সারাহ’র অ্যাপ তৈরি করেন যা গুগলের প্লে স্টোর এবং অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। অ্যাপ চালুর পরেই সারাবিশ্বের অনেক দেশেই তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠে সার্ভিসটি। যার ফলে অ্যাপস্টোরে খুব দ্রুতই বিশ্বের সেরা তিনটি অ্যাপের মধ্যে সারাহ’র অবস্থান তৈরি হয়। এবং এ সেরা তিনের অবস্থান গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর দুই জায়গাতেই হয়ে উঠে। এখনও অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে সারাহ’র অবস্থান দ্বিতীয় এবং গুগল প্লে স্টোরেও আছে শীর্ষে।
কেন জনপ্রিয় সারাহ
হঠাৎ করেই কেন এত জনপ্রিয় হয়ে উঠলো সারাহ এ আলোচনা চলছেই! সারাহ’র শুরু হয়েছে অনেকদিন আগেই তবে অ্যাপ চালু হওয়ার পর থেকেই এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। দেখা গেছে, যখনই কোন মানুষ নিজের নাম ও পরিচয় গোপন করে কিছু করার সুযোগ পায় সেটি নানা ভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। কারণ, এ ক্ষেত্রে যা ইচ্ছে তাই বলা যায়! ইতিমধ্যে অনেক অভিভাবকই এ সার্ভিসটি নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। তাদের মতে, অনেক টিনেজার শিশুরা এ অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে মূলত সাইবার বুলিংয়ের স্বীকার হচ্ছেন। বিশেষ করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই বড় হুমকির কারণ হয়ে উঠছে সারাহ সার্ভিস! গুগল প্লে স্টোরে একজন রিভিওতে লিখেছেন, ‘আমার ১৩ বছর বয়সী বোন সারাহ ব্যবহার করছে এবং সে মৃত্যুর হুমকি পেয়েছে! এই বয়সে মৃত্যুর এমন হুমকি তাকে বিষন্ন করে তুলছে! এটা ঠিক হচ্ছে না।’
তবে অনেকের মতে, সাইবার বুলিং যে সারাহ’র মাধ্যমেই হচ্ছে তা কিন্তু নয়। নানা ভাবেই এটি হচ্ছে। তবে যেহেতু নাম পরিচয় গোপন রাখার সুযোগ রয়েছে তাই অনেকেই সারাহ ব্যবহার করছেন বেশি। যদিও সারাহ’র লক্ষ্য ছিলো নিজে সঠিক থেকে কোন বিষয় তুলে ধরা সেখানে এখন টিনেজার বয়সী অনেকেই নানা ভাবে ব্যবহার করছে সার্ভিসটি। এর মাধ্যমে অনেকেই নানা ধরনের ভালো ভালো মন্তব্য পাচ্ছেন আবার অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্যও পাচ্ছেন।
একই ধরনের নাম ও পরিচয় গোপন রেখে অন্যান্য সার্ভিসের চেয়ে এগিয়ে থাকায় সারাহ’র জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিশ্বের অনেকে দেশের মতো বাংলাদেশেও সারাহ’র ব্যবহার বেড়েছে। অনেকেই নিজেকে পাঠানো বিভিন্ন বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শেয়ার করছেন। ইংরেজি ও আরবি ভাষায় থাকা সারাহ’তে কাউকে বার্তা পাঠানো খুবই সহজ। যাকে পাঠাতে চান তার ঠিকানা গিয়ে নির্দিষ্ট বক্সে লিখে পাঠিয়ে দিলেই তিনি পেয়ে যাবেন এবং আপনার নাম/পরিচয় থাকবে গোপন! সারাহ’র অভিজ্ঞতা নিতে চাইলে এ ঠিকানায় গিয়ে নিবন্ধন করে নিন।
সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড অথরিটি, ফর্চুন, হাউ স্টাফ ওয়ার্কস

No comments

Leave a comment to inspire us.

Powered by Blogger.